বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : সংসারে নানা সমস্যা লেগেই থাকত। আর এই সমস্যাগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতেন ভেটেলি রাণী। পরিবারের কাউকে বলতেও পারতেন না সমস্যার কথা। এ কারণে দুশ্চিন্তায় দিনাতিপাত করতে হতো ভেটেলি রাণীর পরিবারকে। দুশ্চিন্তা থেকে অবসান ও নিজের মনস্কামনা পূরণ করতে গাছের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
প্রাচীন যুগে হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা গাছের বিয়ে দিতেন। সময়ের বিবর্তনে এমন ঘটনা আর খুব বেশি চোখে পড়ে না। তবে গাছের বিয়ের এমন একটি ঘটনা ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ফুটানি বাজারের মহলবাড়ি গ্রামে।
মহলবাড়ি গ্রামের ভেটেলি রাণী ৮ বছর আগে ছেলে হিসেবে পাকুড়গাছ ও মেয়ে হিসেবে বটগাছ একসঙ্গে রোপণ করেন। একই গ্রামের পাথারু রায়কে বটগাছের (মেয়ে) বাবা সম্বন্ধ করে ফাল্গুন মাসের ১৯ তারিখে হিন্দু ধর্মের রীতি অনুযায়ী বিয়ে দেন। আত্নীয়-স্বজনদের দাওয়াত করে ও ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বটগাছকে মেয়ের সাজ, ও পাকুড়গাছকে ছেলের সাজে সাজিয়ে বিয়ে সম্পন্ন করেন।
পাকুড় বরের মা ভেটেলি রাণী বলেন, আমি ও আমার পরিবার নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিলাম। সমস্যা সমাধানের জন্য এবং নিজের মনস্কামনা পূরণের উদ্দেশ্যে গাছের বিয়ে দেওয়ার চিন্তা করি। আট বছর আগে দুটি গাছ একসঙ্গে রোপণ করি। এই মাসে বিয়ের মতো আত্নীয়-স্বজনদের দাওয়াত করি। আমাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ফাল্গুনের ১৯ তারিখে সবাইকে নিয়ে গাছ দুটির বিয়ে সম্পন্ন করি।
বট কন্যার বাবা পাথারু রায় বলেন, প্রতিবেশী ভেটেলি রানী আমাকে বট কন্যার বাবা হওয়ার প্রস্তাব দেন। পরে আমি কয়েকজনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি। তারা বলেন, মেয়ের বাবা হলে পরজন্মের জন্য ভালো। সব মানুষই পরবর্তী জীবনে ভালো কিছু করার আশা করে। সে কারণে আমি প্রস্তাবে রাজি হই। গত বাংলা মাসে (ফাল্গুন) দুটি পরিবারের সম্বন্ধে গাছ দুটিকে বিয়ে দিয়ে দেয়।
পুরোহিত সুকুমার রায় বলেন, হিন্দু ধর্মে গাছের বিয়ে দেওয়া নিয়ে কিছু বলা নেই। যারা বলেন গাছের বিয়ে দিয়েছে এটি তাদের ভূল। তারা শাস্ত্র জানেন না। তবে এটিকে গাছের প্রতিস্থাপন বলে। একসঙ্গে দুটি গাছকে প্রতিস্থাপন করলে পরজন্মে মঙ্গল হয়। এ জন্য ছেলে গাছ ও মেয়ে গাছকে একসঙ্গে প্রতিস্থাপন করানো হয়। এটিকে বিয়ে বলার সুযোগ নেই।