বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশে বয়স ৩২ করার দাবি করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির উপনেতা জিএম কাদের এবং বিএনপির নেতা হারুনুর রশীদ। আজ মঙ্গলবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এ দাবি জানান দুই দলের দুই নেতা।
জিএম কাদের বলেন, করোনা মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। সে কারণে উচ্চশিক্ষার শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারেননি। আবার লকডাউনের কারণে অফিস-আদালতের কার্যক্রম সীমিত হওয়ায় সরকারি চাকরির নিয়োগ কার্যক্রম থমকে আছে। এসব কারণে অনেকের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের নির্ধারিত বয়স ৩০ পার হয়েছে, অনেকের পার হওয়ার পথে। এসব কারণে তারা চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধি করে ৩২ বছর করার দাবি জানান তিনি।
২০২১-২২ অর্থবছরে শিক্ষাখাতে টাকার অংকে বর্তমান বাজেটে বরাদ্দ বাড়লেও জিডিপির অনুপাতে কমছে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, চলতি অর্থবছরের ২.০৯ শতাংশ চেয়ে শিক্ষাখাতে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরে বরাদ্দ জিডিপির আনুপাতিক হার ২.০৮ শতাংশ। মহামারি কোভিড-১৯ এর কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দূরশিক্ষণ কার্যক্রম প্রবর্তন করা প্রয়োজন। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে প্রযুক্তিগত সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে ডিজিটাল যন্ত্র তুলে দেয়ার বিষয়টি বাজেটে নেই।
তিনি আরও বলেন, বাজেটে উচ্চশিক্ষায় ১৫ শতাংশ কর আরোপ করা (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল শিক্ষা) হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এ খরচ শিক্ষার্থীদেরই বহন করতে হবে। এতে উচ্চশিক্ষার ব্যয় বেড়ে যাবে, উচ্চশিক্ষার প্রসার বাধাগ্রস্ত হবে। এই কর আরোপ না করার সুপারিশ করছি।
বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সাল থেকে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন জায়গায় নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। সুতরাং আজকে যাদের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে, তারা অস্থির অবস্থায় আছে। এটা বিবেচনায় রেখে অন্ততপক্ষে কোভিডকালে যতক্ষণ পর্যন্ত করোনামুক্ত হচ্ছি, তার জন্য এই সময়ে চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর দাবি করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী জাতিকে এ ব্যাপারে একটা আশ্বাস দেবেন।
অর্থবিল পাসের আগে বিলের সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে হারুনুর রশীদ আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন, আবার দলের প্রধান। সুতরাং উনাকে নিয়ে যেমন প্রশংসা হবে, পাশাপাশি উনাকে নিয়ে সমালোচনাও হবে। এটি গণতন্ত্রের অর্নামেন্ট (অলঙ্কার)। সমালোচনা করতে গিয়ে তাদের যদি কারাগারে যেতে হয়, তাদের যদি নিপীড়ন ভোগ করতে হয় এটা দুঃখজনক। এটি প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। ভিন্নমত প্রকাশের ক্ষেত্রে যারা আলোচনা-সমালোচনা করতে চায় সেটা সেভাবে নিয়ে আসতে হবে। বেসরকারি মানসম্মত স্কুল-কলেজে কর আরোপ দূরের কথা এদের প্রণোদনা দেন। এদের আরও আর্থিক সহায়তা দেন। তাহলে দেশে যে দক্ষ জনবল জনশক্তি করতে চাচ্ছি, সেক্ষেত্রে আমরা অনেক বেশি অগ্রসর হবো।