বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: বৈশ্বিক করোনা মহামারির সংক্রমণ থেকে জনজীবন আবারও স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। পুরোদমে সড়কে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। এ অবস্থায় বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এই অজুহাতে সরকার বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশেও জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ানোর কথা ভাবছে।
তবে বর্তমান অবস্থায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে জনজীবনে মারাত্মক চাপ পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বলছে, দেশের জ্বালানি মূল্য বিশ্ব বাজারের তুলনায় অনেকটাই কম। তারা বলছে, বিশ্ববাজারে ২০ অক্টোবরে ডিজেলের ব্যারেল প্রতি ৯৪ দশমিক ৫৯ মার্কিন ডলার। আর বাংলাদেশে ডিজেল লিটার প্রতি ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেই হিসেবে ডিজেলের জন্য বিপিসির লিটার প্রতি ১৩.৭৭ টাকা ক্ষতি। এ সময়ে ফার্নেস অয়েলের ব্যারেল প্রতি মূল্য ৪৮৭.২১ মার্কিন ডলার ছিল। আর বাংলাদেশে অয়েলের লিটার প্রতি ৫৩ টাকা বিক্রয় মূল্য থাকলেও অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে এর মূল্য লিটার প্রতি ৫৯ টাকা পুনর্নির্ধারণ করা হয়। সেই হিসেবে ফার্নেস অয়েলের জন্য বিপিসির লিটার প্রতি ৫.৭৩ টাকা ক্ষতি। ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলের ক্ষেত্রে বিপিসির দৈনিক ক্ষতি হচ্ছে ২০ কোটি টাকার বেশি বলে দাবি করেছে বিপিসি।
বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের বর্ধিত দাম মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ লক্ষ্যে প্রস্তাব দিলে জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করতে আমরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তিনটি বৈঠক করেছি। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণ জানা নেই। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেশি হওয়ায় স্থানীয় বাজারে খাদ্যদ্রব্যের দামও বেড়েছে।
বিশ্ববাজারে দফায় দফায় দাম বেড়ে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৮৩ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। গত সাত বছরের মধ্যে তেলের দাম সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এসেছে।
বিপিসি একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, বিশ্ব বাজারের সঙ্গে সমন্বয়ের অজুহাতে এবং পাচারে দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ানোর পাঁয়তারা চলছে।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস ও কয়লার দাম অনেক বেড়েছে। তাই বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করায় সরকারের লোকসান হচ্ছে। আর আশঙ্কার বিষয়, প্রতিবেশি দেশ ভারতে দাম কম থাকায় বাংলাদেশ থেকে ডিজেল, ফার্নেস ও অয়েলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেল পাচার হওয়া নিয়ে। শুধু পেট্রোলই নয়, ডিজেলের দামও দেশটির কোন কোন রাজ্যে আমাদের থেকে অনেক বেশি। এজন্য সীমান্ত দিয়ে পাচারের শঙ্কা রয়েছে। সুতরাং এ অবস্থায় দাম বাড়ানো খুব জরুরি।