বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব, ইয়াহু, ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজনের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করে এসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বকেয়াসহ সব রাজস্ব আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এসব অর্থ আদায় করে তা হলফনামা আকারে হাইকোর্টকে জানাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ১৪৫ পৃষ্ঠার এ সংক্রান্ত রায় প্রকাশ করেন।
রায়ে আদালত বলেন, এটা বাংলাদেশের জনগণের ন্যায্য পাওনা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) এ নির্দেশ প্রতিপালন করতে বলা হয়েছে।
এ মামলায় রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, অ্যাডভোকেট শামীম খালেদ আহমেদ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ারেস আল হারুনী।
এর আগে ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর গুগল-ফেসবুক ও অন্যান্য ইন্টারনেট কোম্পানির বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার বিষয় এবং বাংলাদেশের রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধনের লক্ষ্যে জনস্বার্থে দায়ের করা রিট পিটিশনের চূড়ান্ত শুনানি করে রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিবাদীদের প্রতি পাঁচটি নির্দেশনা জারি করা হয়।
নির্দেশনাগুলো হলো
১. অনতিবিলম্বে সব ইন্টারনেটভিত্তিক কোম্পানি যেমন গুগল, ফেসবুক, ইউটিউব, অ্যামাজন কোম্পানিগুলোকে পরিশোধিত অর্থ থেকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সব প্রকার ট্যাক্স, ভ্যাট এবং অন্যান্য রাজস্ব আদায় করতে হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিটিআরসিসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলোকে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে।
২. ইন্টারনেট ভিত্তিক কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশ থেকে বিগত পাঁচ বছরে পরিশোধিত অর্থের বিপরীতে আনুপাতিক হারে বকেয়া রাজস্ব আদায় করতে হবে।
৩. ওই রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর হলফনামা আকারে অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবে।
৪. এ রায়টি একটি চলমান আদেশ বা কন্টিনিউয়াস ম্যানডেমাস হিসেবে বলবৎ থাকবে।
৫. এ রায়ের বাস্তবায়নে কোনো ধরনের ব্যত্যয় ঘটলে বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক যেকোনো সময় আদালতে আবেদন দাখিল করে প্রতিকার চাইতে পারবেন।
রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল রিট দায়ের করেন হাইকোর্টের ছয় আইনজীবী। রিটকারী ছয় আইনজীবী হচ্ছেন- ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউসার, অ্যাডভোকেট আবু জাফর মো. সালেহ, অ্যাডভোকেট অপূর্ব কুমার বিশ্বাস, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাজ্জাদুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মাজেদুল কাদের।
ওই রিটের শুনানি শেষে ২০২০ সালে ৮ নভেম্বর হাইকোর্ট রায় প্রদান করেন। আজ চূড়ান্ত রায় প্রকাশ করা হয়।