বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: দুপুর ২টায় সিলেট আলিয়া মাদরাসার মাঠে বিএনপির সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের তিন ঘণ্টা আগেই সকাল ১১টা ১০ মিনিটে সমাবেশে শুরু হয়েছে।
জাতীয় ও দলীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে বিএনপির বিভাগীয় এই গণসমাবেশ।
সমাবেশের শুরুতে বক্তব্য রাখছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা এখনো সমাবেশস্থলে উপস্থিত হননি।
এর আগে সকাল থেকেই মিছিল আর স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সিলেট বিভাগীয় গণসমাবেশস্থল সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠ। পোস্টার, ব্যানার, বিলবোর্ড এবং বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় উৎসবমুখর সিলেট নগরী।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকাল থেকে সিলেট ও দেশের অন্যান্য স্থানের মধ্যে বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও বৃহস্পতিবার থেকেই বিভাগের আওতাধীন সব জেলা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের তিন চাকার গাড়ি, মোটরবাইক, এবং মাইক্রোবাস, ট্রেন, ট্রাক, লঞ্চ ও নৌকা এবং ছোট যানবাহন যেমন হিউম্যান হলার, অটোরিকশায় করে সমাবেশস্থলে আসতে দেখা গেছে।
সমাবেশের প্রস্তুতি কার্যক্রম তদারককারী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বাস ধর্মঘটের কারণে সম্ভাব্য বাধা ও চ্যালেঞ্জ এড়াতে মঙ্গলবার থেকে তাদের নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দিতে সিলেটে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘গত তিন দিন ধরে সমাবেশস্থলে বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়ো হয়েছে এবং তারা সেখানে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। এটি একটি নজিরবিহীন গণঅভ্যুত্থান। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের সমাবেশে আসছে।
ডা. মঈন বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধিতে অতিষ্ট হওয়ায় অনেক সাধারণ মানুষ তাদের সমাবেশে যোগ দিতে আসছেন। তারাও দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে চায়। শনিবার আমাদের জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে। এটি একটি ঐতিহাসিক সমাবেশ হবে।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইউম অভিযোগ করেন, সরকারের চাপে পরিবহন সংগঠনগুলো ধর্মঘট ডেকেছে।
কাইয়ুম দাবি করেন, ‘কোনো ষড়যন্ত্রই দলীয় নেতাকর্মীদের জনসমাগম ঠেকাতে পারবে না।’
সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলায় পরিবহন ধর্মঘট এবং সিলেট জেলায় অঘোষিত ধর্মঘটের কারণে সারাদেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সিলেট বিভাগ।
শনিবার সকাল থেকে সিলেট জেলার বাস ধর্মঘট শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শুক্রবার সকাল থেকে সিলেট নগরী থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
শুক্রবারের জন্য তাদের ভ্রমণের পরিকল্পনা করা যাত্রীদের সিলেটসহ আরো তিনটি জেলায় গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
তবে তিন চাকার গাড়ি ও ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাসের চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল ও ফরিদপুরের পর বিভাগীয় পর্যায়ে শনিবার সিলেটে বিএনপির সপ্তম সমাবেশ হবে।
ময়মনসিংহ, বরিশাল, রংপুর, খুলনা ও ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগেও একই ধরনের ধর্মঘট শুরু করা হয়েছিল। তবে দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক বাধা অতিক্রম করে সমাবেশে অংশ নেন।
চলমান আন্দোলনের গতি অব্যাহত রাখার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক জনসভার ঘোষণা দেয় বিএনপি।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও যশোরে পূর্বে পুলিশের হাতে দলের পাঁচ নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতেই এই সমাবেশ।
বিএনপি দীর্ঘ দিন ধরে দাবি করে আসছে যে আগামী সাধারণ নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে। অপরদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংবিধানে এমন সুযোগ নেই বলে তা তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।