এ কে এম আজাদ বিশেষ প্রতিনিধি : কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার ছাত্র, যুব, শ্রমিক ও গণঅধিকার পরিষদের কর্মী সমাবেশের আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদের চান্দিনা উপজেলা শাখা। আজ শুক্রবার বিকাল ৩ টায় চান্দিনা উপজেলায় পালকি সিনেমা হলের সামনে এই কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মী সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, “আওয়ামিলীগ দেশে গত ১৫ বছর দখলদারি, লুটপাট, চাঁদাবাজি করেছে,তারা পালিয়ে যাওয়ার পর নব্য দখলদারের জন্ম হয়েছে। আপনাদের মনে রাখতে হবে আওয়ামিলীগের ১৫ বছরের শাসন ব্যবস্থা ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে ৩৬ দিনও ঠিকে নাই,আপনারা যারা নব্য দখলদারি চালাচ্ছেন তাদের পরিণতিও হাসিনার মত হবে। ২৪ সালো যে বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে, তা রাতারাতি হয়নি,গত ১৫ বছর বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলোর আন্দোলন সব শেষ ছাত্র জনতার নেতৃত্বে সেই আন্দোলন সফল হয়েছে। ২৪ সালের আন্দোলনের প্রথম দাবি ছিল ১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্র পুর্নবাহলের। সেই আন্দোলনে সরকার দমনপীড়ন চালানো রূপ নেয় সরকার পতনের দিকে। এই ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি রচিত হয়েছিলো ১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে। ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে গেলেও এখন দেশে এবং দেশের বাহিরে বসে আওয়ামিলীগ ও তার দোসররা ষড়যন্ত্র করছে। যেই ছাত্র জনতা আন্দোলন করে হাসিনার পতন ঘটিয়েছে তারা কিন্তু ঘরে ফিরে যায়নি,আমরা আওয়ামিলীগ ও তার দোসরদের যে কোন ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার জন্য প্রস্তত আছি।বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর মনে হয়েছিল দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে কিন্তু এখনও সেটা করতে পারে নাই। সরকার যদি জনগণের আকাঙ্খা বুঝতে ভুল করে তাহলে জনগণ সরকার বিপক্ষে রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। জনগণ যেভাবে ক্ষমতায় বসিয়েছে সেভাবে ক্ষমতা থেকে সরাতেও পারে।
সংস্কার কমিশন গঠন করা হলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান মান কোন অগ্রগতি দেখা যায় নি। উপদেষ্টাদের অনেকের বক্তব্যে সন্দেহ সৃষ্টি হচ্ছে যে তারাও ওয়ান ইলেভেনের মত বিরাজনীতিকরণ করে কিনা।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বলেন, “জুলাই আগস্ট গনঅভ্যুত্থানে কুমিল্লা জেলার যারা শহীদ হয়েছে প্রত্যেকটা শহীদ পরিবারকে প্রাপ্য মর্যাদা নিশ্চিত এবং ন্যূনতম ১কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। একদিকে যাদের হাতে ২হাজারের অধিক শহীদের রক্ত লেগে আছে সেই খুনি ওবায়দুল কাদেররা নিরাপদে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪জন শিক্ষার্থী, চট্টগ্রামের ছাত্রনেতা জসিমকে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে হত্যা করে।স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলবো বিপ্লবী ছাত্র জনতাকে যদি নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হন তাহলে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করুন।স্পষ্ট করে বলতে চাই শহীদেরা যেমন তাদের বাবা মায়ের কোলে ফিরে আসবে না ঠিক তেমনি আওয়ামীলীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না।নেতৃবৃন্দের উদেশ্যে বলবো বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বা উপদেষ্টা হওয়ার চেয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মী হওয়া আমার কাছে সৌভাগ্যের। শিক্ষার্থীদের পাশে থাকুন,জনগনের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়ান তারাই আপনাদের নেতা বানাবে।
কর্মী সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন গণঅধিকার পরিষদ কুমিল্লা জেলার সাবেক সদস্য সচিব গিয়াস হৃদয়, সঞ্চালনা করেন যুব অধিকার পরিষদ কুমিল্লা উত্তর জেলার সিনিয়র সহ সভাপতি এম এ জামান। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রূপ হোসাইন মিয়া রাজ,
কুমিল্লা জেলার সাবেক আহ্বায়ক ফয়েজুল্লাহ, যুব অধিকার পরিষদ কুমিল্লা উত্তর জেলার সভাপতি আলমগীর হোসেন, চান্দিনা উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক নাজমুল হাসান, সদস্যসচিব আরিফ হোসেন অর্ক, তেজগাঁও থানার আহবায়ক শাহিন, যুব অধিকার পরিষদ কুমিল্লা উত্তর জেলার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, কুমিল্লা জেলার ছাত্র নেতা রাসেল, রাফসান প্রমুখ।