বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে যুবলীগের কেন্দ্রীয় আইন সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল এ খবর নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “জাতীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা’ নিয়ে কটাক্ষ করায় ও সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”
এই অব্যাহতির বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় গতকাল শনিবার রাতে গণমাধ্যমকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন বলেন, অব্যাহতির বিষয়টি জানলেও এখনও চিঠি হাতে পাইনি। অব্যাহতির চিঠি হাতে পেলেই এর জবাব দেব। চিঠি না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না।’
তিনি বলেন, ‘থানার একজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া ঠিক হয়নি। ফেসবুক লাইভে এটা বলেছিলাম। জয়বাংলা স্লোগানকে খাটো করা হয়নি বা এ নিয়ে অযাচিত কিছু বলিনি।’
সুমন বলেন, ‘যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ আমাকে কমিটিতে নিয়েছিলেন। তিনিই যদি মনে করেন আমাকে বাদ দিলে দলের ভালো হবে, তাহলে সাংগঠনিক এ সিদ্ধান্ত মেনে নেব। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে আজীবন দলের ভালোর জন্য কাজ করে যাব।’
সূত্র জানায়, শরীয়তপুরের পালং মডেল থানার ওসি আক্তার হোসেনের সমালোচনা করতে গিয়ে আলোচিত-সমালোচিত আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন গত ৬ আগস্ট (শুক্রবার) নিজ ফেসবুক থেকে লাইভে আসেন। তখন সুমন বলেন, ‘আপনারা জানেন যে গতকালকে (৫ আগস্ট) শেখ কামাল সাহেবের জন্মদিনে শরীয়তপুরের পালং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তার হোসেনের আওয়ামী লীগের দলীয় স্লোগান দেওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এই জিনিসটা দেখার পর আমার কাছে মনে হয়েছে, দু-একটা কথা বলা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা একটা জিনিস খেয়াল করে দেখেন যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্লোগান দেয়ার মানুষ কী এতই কম যে একজন ওসি সাহেবের এই স্লোগান দিতে হবে।’
যুবলীগের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ব্যারিস্টার সুমনের এই লাইভ ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
অনেকেই এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ব্যাকগ্রাউন্ড না দেখে দলীয় নেতা বানালে যা হয়, সুমনের ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। যুবলীগের মতো ঐতিহ্যবাহী একটি সংগঠনের আইন সম্পাদক হলেও দলের পক্ষে কোনদিন তাকে অবস্থান নিতে দেখা যায়নি। বরং বার বার আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছেন সরকার বিরোধী ফেসবুক লাইভে এসে।
তখন ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে কটাক্ষ করায় ফেসবুকে সুপর্না ফারজানা লিখেন, ‘আপনার অবস্থান পরিষ্কার করুন। জয় বাংলা স্লোগান নিয়ে আপনার সমস্যা কেন?’ মাহমুদুল হক সৈকত নামের আরেকজন লিখেন, ‘আপনি আওয়ামী লীগের কোনো সংগঠনে থাকার অধিকার রাখেন না। আপনি দলে এসে, পদ নিয়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন।’
রনি কান্তি দে নামে একজন এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেন, ‘ব্যারিস্টার সুমন সাহেবের কোন রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড নেই।’ ইকবাল মোল্লা নামের আরেকজন লিখেন, ‘সুমন সাহেব আওয়ামী যুবলীগ করেন? কোনদিন তো একটা দলীয় পোস্ট করতে দেখলাম না। আপনাকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হোক।’
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১০ মার্চ বিচারপতি নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ‘জয় বাংলা’কে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি দেন।