বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে স্বামীর বাড়িতে রহস্যজনক মৃত্যু হওয়া ২০ বছর বয়সী সানজিদাকে অবশেষে দাফন করা হয়েছে। মালয়েশিয়া প্রবাসী বাবার অপেক্ষায় চারদিন ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা হলো মেয়ের নিথর দেহ।
বাবা দেশে ফেরার পর বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কাইচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জানাজা শেষে কাইচাইল সামাজিক কবরস্থানে সানজিদাকে দাফন করা হয়।
সানজিদার খালা সুমাইয়া জানান, বুধবার রাত ২টার দিকে মালয়েশিয়া থেকে নিজ বাড়িতে ফেরেন সানজিদার বাবা সাইদ শেখ। বাড়ি ফেরার পর থেকেই বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। জানাজার আগেও তিনি কয়েকবার মূর্ছা গেছেন।
১২ ডিসেম্বর রাতে স্বামীর সঙ্গে এক বিছানায় ঘুমালেও সকালে ঘরের আড়ার সঙ্গে সানজিদার ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। মেয়ের এমন মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না বাবা। স্বামীর সঙ্গে এক বিছানায় ঘুমানো মেয়ে কীভাবে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলল তা নিয়ে এখনো চলছে জল্পনা-কল্পনা।
নিহত সানজিদার প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন জানান, চারদিন ধরে কাইচাইল চৌকিদারপাড়া জামে মসজিদের সামনে ফ্রিজিং গাড়িতে সানজিদার মরদেহ রেখে দেওয়া হয়েছিল। সানজিদার বাবা মালয়েশিয়া থেকে ফেরার অপেক্ষায় মরদেহ এভাবে রাখা হয়েছিল। বুধবার রাতে বাড়ি ফেরেন সানজিদার বাবা। সকালে তাকে দাফন করা হয়।
জানা গেছে, মাত্র সাত মাস আগে একই গ্রামের শাহজাহান ব্যাপারীর ছেলে সাহারিয়ার রাতুলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করে বিয়ে হয় সানজিদার। ঘটনার দিন রাতে স্বামী রাতুলের সঙ্গে একই বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলেন সানজিদা। পরদিন সকালে সানজিদাকে ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো ঝুলতে দেখেন স্বামী রাতুল।
পরে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে মরদেহ নামিয়ে খাটের ওপর রেখে এলাকাবাসীকে খবর দেন রাতুলের মা। এরপর এলাকাবাসী থানায় খবর দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়।
১৩ ডিসেম্বর বিকেলে মরদেহটি স্বজনদের বুঝিয়ে দেয় পুলিশ। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকা থেকে ফ্রিজিং গাড়ি আনা হয়। এ সময় সানজিদার মরদেহ বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে কাইচাইল চৌকিদার পাড়া জামে মসজিদের সামনের রাস্তায় ফ্রিজিং গাড়িতে রেখে পাহারা দেন পরিবারের সদস্যরা।
নিহতের মা সাহিদা বেগম বলেন, আমার মেয়ে ওই ছেলেকে পছন্দ করায় আমি পরিবারের সবাইকে বুঝিয়ে কোরবানির ঈদের এক সপ্তাহ আগে বিয়ে দেই। আমার মেয়ে কীভাবে মারা গেছে আমি কিছু বলতে পারি না।
টঙ্গিবাড়ী থানার ওসি মোল্লা সোয়েব আলী বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের বুঝিয়ে দেই। নিহতের বাবা মালয়েশিয়া থেকে আসার অপেক্ষায় মরদেহ ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা হয়েছে বলে শুনেছি।