বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: ফেসবুক লাইভে এসে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খান। এ প্রসঙ্গে গতরাতে নায়ক রিয়াজ কিছু না বললেও বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। তার শ্বশুরের জন্য সবার কাছে দোয়া চান এই নায়ক।
এদিন সাংবাদিকদের নায়ক রিয়াজ বলেন, “আমার বাবার জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন তাকে মাফ করে দেন।”
পোস্টমর্টেম শেষে মহসিন খানের মরদেহটি প্রথমে ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডের বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। বাদ আসর স্থানীয় মসজিদে নামাজে জানাজার পর মোহাম্মদপুর বেড়িবাধ সংলগ্ন কবরস্থানে তার পূর্ব ইচ্ছামোতাবেক দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন রিয়াজ।
মহসিনের একাকিত্বের বিষয়ে জানতে চাইলে রিয়াজ বলেন, এসব বিষয়ে কথা বলার মত সময় এখন না। পরবর্তীতে এসব বিষয়ে কথা বলবো। এর চেয়ে আর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
বুধবার রাত পৌনে ১০টার দিকে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে নিজ বাসায় ফেসবুক লাইভে এসে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে আত্মহত্যা করেন চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খান। যারা সেই সময় লাইভটি দেখছিলেন তারাই পুলিশকে ৯৯৯ এ খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করেন।
আত্মহত্যার আগে একটি সুইসাইড নোট রেখে গেছেন আবু মহসিন খান। পুলিশ বলেছে, সেখানে তিনি লিখেছেন ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. সাজ্জাদুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আবু মহসিন খান একাই ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন। তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নন বলে সুইসাইড নোটে লিখে গেছেন তিনি।
সাজ্জাদুর রহমান বলেন, মহসিন খানের সুইসাইড নোটে লেখা রয়েছে, ‘ব্যবসায় ধস নেমে যাওয়ায় আমি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ি। আমার সঙ্গে অনেকের লেনদেন ছিল। কিন্তু তারা টাকা দেয়নি। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।’
এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মহসিন খান ২০১৭ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে পরে তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন।
এদিকে ধানমণ্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া বলেন, উনার (মহসিন) যারা ফলোয়ার ছিলেন, তারা ঘটনাটি দেখে ৯৯৯ এ ফোন দেন। পরে পুলিশ ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর বাড়ির পঞ্চম তলা থেকে মহসিনের মরদেহ উদ্ধার করে।
ওসি বলেন, চেয়ারের মধ্যে মৃতদেহ আর পাশেই তার বৈধ পিস্তলটি পড়েছিল। পঞ্চম তলার ওই ফ্ল্যাটে কেউ ছিলেন না। তার স্ত্রী ও সন্তান অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন।
কেন আত্মহত্যা করেছেন, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রস্তুতি নিয়েই এই আত্মহত্যা করেছেন তিনি। চিরকুটে সবকিছু লিখে গেছেন। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন, ব্যবসা করতেন এবং লোকসানের ভারে কীভাবে জর্জরিত হয়েছেন, সব কিছুই লিখেছেন।
৫৮ বছর বয়সী আবু মহসিন খান পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর ভবনে নিজের ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। আবু মহসিন এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক ছিলেন। বড় ছেলে তার মাকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন।