রোববার জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে দেয়া ভাষণে এই কথা বলেন তিনি। ফিলিস্তিনে চলমান অস্থিরতা ও গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের জেরে যৌথ পদক্ষেপ গ্রহণে তৃতীয় দফায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব তার ভাষণে বলেন, ‘চলমান সংঘর্ষ চরমভাবে আতঙ্কজনক। সাম্প্রতিক সহিংসতা শুধু মৃত্যু, ধ্বংস ও নৈরাশ্যের চক্র বাড়াবে এবং শান্তি ও সহাবস্থানের সম্ভাবনাকে দূরে ঠেলে নিয়ে যাবে।’
ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের প্রতিনিধি দলের অংশ গ্রহণে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের প্রথম প্রকাশ্য বৈঠকে গুতেরেস বলেন, জাতিসঙ্ঘ শিগগির যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় সব পক্ষেই কার্যকরভাবে যুক্ত হয়েছে।
গুতেরেস জোর দিয়ে বলেন, ‘এক পক্ষের রকেট ও মর্টার এবং অপরপক্ষের বিমান ও কামান হামলা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।’
জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব সতর্ক করে বলেন, চলমান সংঘর্ষ শুধু ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদেরই নয় বরং এই অঞ্চলকে বিধ্বংসী ঘটনাপ্রবাহের ভেতর দিয়ে সহিংসতার বাঁকে টেনে নিয়ে যাবে এবং পুরো অঞ্চলের জন্য নতুন বিপদ তৈরি করবে।
বৈঠকে অংশ নিয়ে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকি বলেন, ‘যতবার ইসরাইল কোনো বিদেশী নেতার কাছ থেকে তাদের আত্মরক্ষার অধিকারের পক্ষে বক্তব্য শোনে, ততবারাই পুরো পরিবারকে তাদের ঘুমের ভেতর হত্যা অব্যাহত রাখতে তারা উৎসাহিত হয়।’
অপরদিকে জাতিসঙ্ঘে ইসরাইলের দূত গিলাদ এরদান বৈঠকে বলেন, হামাসের বাছবিচারহীন হামলা মোকাবেলায় ইসরাইল আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলছে এবং বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এড়াতে ‘অতুলনীয় পদক্ষেপ’ নিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, ‘ইসরাইল তার সন্তানদের রক্ষায় মিসাইল ব্যবহার করে। হামাস তার মিসাইল রক্ষায় সন্তানদের ব্যবহার করে।’
তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাধার কারণে এই বৈঠকেও গাজায় সহিংসতার বিষয়ে কোনো যৌথ অবস্থান নিতে পারেনি জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ। সহিংসতার নিন্দা জানালেও যুক্তরাষ্ট্রের বাধায় কোনো প্রস্তাব তৃতীয় দফার এই বৈঠকেও কোনো প্রস্তাব পাস করা হয়নি।
এর আগে সপ্তাহজুড়ে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে ইসরাইল মসজিদুল আকসায় প্রবেশ করে মুসল্লিদের ওপর হামলার জেরে গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরাইলি বাহিনীকে ১০ মে মসজিদ থেকে সরে যাওয়ার আলটিমেটাম দেয়। আলটিমেটাম শেষে গাজা থেকে ইসরাইলে রকেট হামলা শুরু করে হামাস ও অন্য সশস্ত্র সংগঠনগুলো। এর জবাবে গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী।
এক সপ্তাহ অব্যাহত ইসরাইলি বিমান হামলায় সোমবার পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় ৫৮ জন শিশু ও ৩৪ জন নারীসহ অন্তত ১৯২ জন নিহত হয়েছেন। অপরদিকে গাজা থেকে নিক্ষিপ্ত রকেট হামলায় ইসরাইল ভূখণ্ডে দুই শিশুসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন। সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি ও আরব নিউজ