নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর উপকন্ঠের জনপদ রূপগঞ্জে চলছে শিক্ষা নিয়ে বেসাতি। মানহীন শিক্ষক নিয়োগ, তহবিল আত্মসাৎ, মানোন্নয়নে মন্থরগতি আর দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের গুরুতর অভিযোগ আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদের বিরুদ্ধে। তাছাড়া ২০১৬ সালে হাইকোর্টের দেয়া রায় অনুসারে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমপিগণ সভাপতি হতে পারবেন না। যা মানা হয়নি রূপগঞ্জের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে । এমপি একাধিক পদে থাকার পাশাপাশি, পরিবার, আত্মীয়স্বজন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আর অনুসারীদের প্রধান করেছেন তিনি। এতে ভেঙ্গে পড়েছে সেখানকার শিক্ষা ব্যবস্থা।
তথ্যমতে, ২০০৯ সালে প্রণীত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালার ৫(২) ও ৫০ বিধি অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। যার ফলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিসেবে এমপিদের দায়িত্ব পালন এবং গভর্নিং বডির বিশেষ কমিটিতে তারা থাকতে পারবেন না বলে সে রায়ে আদেশ প্রনীত হয়। অথচ সে রায়কে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে রূপগঞ্জের অর্ধেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদের প্রধান হয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী। শুধু তাই নয় নিয়ম বহির্ভুতভাবে যোগ্য পরিচালক বাদ দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদের প্রধান করা হয়েছে তার ছেলে গাজী গোলাম মতুর্জা পাপ্পা, গাজী গোলাম আসরিয়া বাপ্পী, স্ত্রী হাসিনা গাজীকে। অবাক করার মতো ব্যাপার পুত্রের শ্বাশুড়িকেও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি করেছেন গোলাম দস্তগীর গাজী।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলার ৪০টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২০টি মাদ্রাসা ও ৫টি কলেজের মধ্যে স্থানীয় সাংসদ, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী তার কাছের ব্যক্তিদের ক্রীড়া আর সহকারী শিক্ষকদের প্রধান করেছেন তিনি। এর ফলে পাঠদানের চেয়ে দলীয় কর্মসূচীতেই তাদের অংশগ্রহন অধিক দেখা যায়।
সরাসরি সভাপতি না থাকার বিধান তোয়াক্কা না করে রূপগঞ্জের এমপি নিজে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হবার পাশাপাশি প্রায় সবগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তার আত্মীয়স্বজন, ঘনিষ্ঠজন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও অনুসারীদের রেখেছেন। এ অবস্থায় রূপগঞ্জের শিক্ষার মান তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে।