বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: ধর্মশালায় বোলিংয়ে শুরুটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশ। তবে ডেভিড মালানের সেঞ্চুরি ও জনি বেয়ারেস্টো এবং জো রুটের ফিফটিতে বাংলাদেশের সামনে রানের পাহাড় দাঁড় করিয়েছে ইংল্যান্ড। মালান খেলেন তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এ ম্যাচে জয় পেতে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে ৩৬৫ রান।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) হিমাচল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৬৪ রান তুলে ইংল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৪০ রান করেছেন মালান। বাংলাদেশের হয়ে ৪ উইকেট শিকার করেছেন মেহেদী।
গত ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নতুন বলে সুবিধা করতে পারেননি পেসাররা। তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুটা ভালোই করেন তাসকিন-মুস্তাফিজ। ইনিংসের ৫ম ওভারে উইকেটের দেখাও পেতে পারতেন। মুস্তাফিজের বাউন্সারে পুল করেছিলেন ডেভিড মালান। তবে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। বল উইকেটকিপারের গ্লাভসে জমা পড়লে কট বিহাইন্ডের আবেদন করে বাংলাদেশ। কিন্তু আম্পায়ার তাতে সাড়া দেননি। এরপর রিভিউ নেন সাকিব। কিন্তু লাভ হয়নি। তৃতীয় আম্পায়ার নিশ্চিত করেছেন বল মালানের কাঁধে লেগেছিল।
শুরুটা ধীরগতির হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই রানের গতি বাড়িয়েছে ইংল্যান্ড। দুই ওপেনার মালান ও বেয়ারস্টোর সাবলীল ব্যাটিংয়ে ৪৯ বলেই প্রথম অর্ধশতক স্পর্শ করে ইংলিশরা। সাফল্যের খোঁজে দশ ওভারের মধ্যেই ৫জন বোলার ব্যবহার করেন সাকিব। তিন পেসারের সঙ্গে হাত ঘুরিয়েছেন সাকিব-মিরাজও। তবে কেউই সাফল্যের দেখা পাননি। ফলে প্রথম পাওয়ার প্লে শেষে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬১ রান তুলে ইংল্যান্ড।
উড়ন্ত সূচনার পর সাকিব-মিরাজদের পাত্তায়ই দিচ্ছিলেন না মালান-বেয়ারস্টো। বারবার বোলিং পরিবর্তন করেও সাফল্যের দেখা মিলছিল না। দল যখন বিপদে তখন আরও একবার এগিয়ে আসেন সাকিব। শেষ পর্যন্ত অধিনায়কের হাত ধরেই ব্রেকথ্রু পায় বাংলাদেশ। ইনিংসের ১৮তম ওভারের পঞ্চম বলটি খানিকটা দ্রুতগতির ছিল। টার্ন করেনি। ব্যাকফুটে গিয়ে ভুল করেন বেয়ারস্টো। আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে হয়েছেন বোল্ড। ৫২ রান করা এই ওপেনার সাজঘরে ফেরায় ভাঙে ১১৫ রানের উদ্বোধনী জুটি।
প্রথম ফিফটিতে ৩৯ বল খরচ করেছিলেন মালান। এরপর রানের গতি কিছুটা কমিয়েছেন। তাতে পরের ৫০ রান তুলেছেন ৫২ বলে। সবমিলিয়ে ৯১ বলে তিন অঙ স্পর্শ করেন এই ওপেনার। অবশেষে মালানকে থামান মেহেদী। এই স্পিনারের টসড আপ ডেলিভারিতে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন তিনি। ১০৭ বলে করেছেন ১৪০ রান। ১৬টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৫টি ছক্কা। সেঞ্চুরির পর ১৬ বলে তিনি করেছেন ৪০ রান। রুটের সঙ্গে তার দ্বিতীয় উইকেট জুটি থেমেছে ১৫১ রানে।
উইকেটে এসেই আক্রমণাত্মক শুরু করেছিলেন জস বাটলার। তবে বিধ্বংসী হয়ে ওঠার আগেই এই উইকেটকিপার ব্যাটারকে ফেরান শরিফুল ইসলাম। বাঁহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্টাম্পে টেনে এনে বোল্ড হয়েছেন বাটলার। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১০ বলে ২০ রান। বাটলার ফেরার পরের বলেই ফিরেছেন লিয়াম লিভিংস্টোনও। এই মিডল অর্ডার ব্যাটারকেও দুর্দান্ত ডেলিভারীতে বোল্ড করেছেন শরিফুল। ডাক খেয়ে লিভিংস্টোন সাজঘরে ফিরলে কিছুটা দেরিতে হলেও লড়াইয়ে ফেরে বাংলাদেশ।
মালানের মতোই সেঞ্চুরির পথে হাঁটছিলেন জো রুটও। তবে ৮২ রানে এই ব্যাটারকে থামিয়েছেন শরিফুল। রুট ফেরার পর একমাত্র বিশেষজ্ঞ ব্যাটার হিসেবে উইকেটে ছিলেন হ্যারি ব্রুক। ৪৫তম ওভারে এই ব্যাটারকে ফিরিয়ে ইংলিশদের লাগাম টেনে ধরলেন শেখ মেহেদী। এই অফ স্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল টেনে খেলতে গিয়ে উপরে তুলে দেন ব্রুক। এর আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২০ রান।
এরপর বেশিক্ষন টিকতে পারেননি স্যাম কারানও। মেহেদীর তৃতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। আউট হওয়ার আগে করেছেন ১৫ বলে ১১ রান। একই পথে হেটেছেন আদিল রশিদও। মেহেদীকে টেনে কাউ কর্নারের দিকে মেরেছিলেন রশিদ। বাউন্ডারিতে হৃদয়-শান্তর রিলে ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ আউটের শিকার হন তিনি।
শেষদিকে ইংলিশদের লাগাম টেনে ধরায় কিছুটা হলেও স্বস্তি ফেরে টাইগার শিবিরে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৬৪ রান তুলে ইংল্যান্ড।