বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলায় প্রধান আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করার পর ফের বনানীর নিজ বাসায় আজ সন্ধ্যায় এ নায়িকা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে পরীমনি বলেন, অনেক শান্তি লাগছে। অপরাধী অনেক তাড়াতাড়ি গ্রেপ্তার হয়েছে। আশা করিনি। আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ যারা পাশে ছিলেন। আমার আইনের ওপর আস্থা আছে। যেহেতু সবাই আমার পাশে আছে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমি যাদের সঙ্গে কাজ করি সহকর্মী ও আমার ভক্তরা এভাবে পাগলের মতো ভালোবাসে জানতাম না।
ঢাকা বোট ক্লাবে মদের পার্টিতে কেন গিয়েছিলেন? এ বিষয়ে পরীমনি বলেন, ‘আপনাদের কি মনে হয়, আমরা পার্টি করার মুডে ছিলাম? মদ খেতে গিয়েছিলাম? একটু যদি ভাবেন।’
সংবাদ সম্মেলনে পরীমনি নিজের ওপর হওয়া নির্যাতনের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমরা সত্যিই সেখানে যাওয়ার মতো অবস্থায় ছিলাম না। ঘরোয়া কাপড়চোপড় পরে কি যাওয়া যায়? পরে তারা বেনজীর ভাইয়ের (আইজিপি বেনজীর আহমেদ) কথা বলে। আমাদের সাথে থাকা ছোট বোনের ওয়াশরুমে যাওয়ার দরকার ছিল।’ পরীমণিরা দ্রুত ঢাকা বোট ক্লাব থেকে বের হয়ে যেতে চাইলেও অমি তাদের জোর করেই আটকে রাখছিলেন বলে জানান পরী।
এই ঘটনার পর টের পেলাম। সবাইকে অনেক ধন্যবাদ জানাতে চাই। তবে চাইবো এই ঘটনার বিচার দ্রুত হোক। এটাই একমাত্র চাওয়া এখন। যত দিন সুবিচার পাবো না লড়াই চালিয়ে যাবো।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে পরীমনি ওই রাতের ঘটনার শিকার তার ডিজাইনার বন্ধু জিমিকে ডেকে আনেন। জিমি জানান, বন্ধু অমির কথায় বিশ্বাস করেই পরীমনিরা উত্তরা বোট ক্লাবে গিয়েছিলেন। অমির অনুরোধেই ক্লাবের ভেতরে যেতে হয়েছিল তাদের। জিমির ক্ষতস্থান দেখিয়ে পরীমনি বলেন, ‘অমি তো বাধা দিতে পারত। কিন্তু সেটা না করে জিমিকে ব্লেম করছে।’
সংবাদ সম্মেলনে পরীমনি স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি অনেক সাহস পাচ্ছি। আরও শক্তভাবে দাঁড়াতে আমি পারব এবার। আমি সবার কাছে অনেক বেশি কৃতজ্ঞ।’
আজ রাত ৮টায় সংবাদ সম্মেলনটি শুরু হয়। সেখানে সংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন পরিমনি। তিনি বলেন, ‘আমি আবার কাজে ফিরতে চাই। এই ট্রমা থেকে বের হতে চাই। ওই দিনের রাতের ঘটনা আর মনে করতে চাই না। এত সাহস আপনারা যুগিয়েছেন, তাতে আমি কীভাবে ভেঙে পড়ব, আমি ভেঙে পড়ব না।’
আসামিদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে পরীমনি বলেন, ‘এখন ভরসা পাচ্ছি। স্বস্তিতে নিশ্বাস নিতে পারছি। অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর দ্রুত প্রধান আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিশ্চিন্ত হলাম যে বিচার পাবো। বাকি যারা অভিযুক্ত তাদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।’
সোমবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরা-১ নম্বর সেক্টরের-১২ নম্বর রোডে নাসির উদ্দিনের বাসায় অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গোয়েন্দা বিভাগ (উত্তর-তেজগাঁও, গুলশান, মিরপুর ও উত্তরা) এবং সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার হারুন-অর-রশীদ সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
হারুন-অর-রশীদ বলেন, অভিযানকালে নাসিরের বাসা থেকে বিদেশি মদসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। তার বাসায় উঠতি বয়সী নারীরা এসে মদপান করতেন বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। তার বাসায় ডিজে পার্টির আয়োজন ছিল বলেও জানান তিনি।