বঙ্গ নিউজ বিডি ডেস্ক : দীর্ঘ চার বছর পর আজ ইমাম খামেনি গ্রান্ড মসজিদে জুমার নামাজ পড়াবেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ফলে তার জুমার খুতবা থেকে বড় ধরনের ঘোষণা আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শুক্রবার (০৪ অক্টোবর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেহরানের কেন্দ্রে অবস্থিত ইমাম খামেনি গ্রান্ড মসজিদে সবশেষ ২০২০ সালে জুমার নামাজ পড়িয়েছেন তিনি। এরপর আজ আবার এ মসজিদে জুমার নামাজ পড়াবেন সর্বোচ্চ এ নেতা।
আলজাজিরা জানিয়েছে, জুমার নামাজের আগে জাতির উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন খামেনি। এতে তিনি চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলে হামলার পর আগামীর পরিকল্পনা নিয়েও বক্তব্য রাখবেন। গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রথম বর্ষপূর্তির তিন দিন আগে তিনি এ বক্তব্য রাখবেন।
এর আগে হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার পর গোপন ও নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে।
ইরানের অভ্যন্তরীণ গোপন সংবাদের বিষয়ে অবগত এমন দুজন আঞ্চলিক কর্মকর্তা বার্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন- সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে দেশের ভেতরে একটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছে—এমন খবর জানার পরই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার পর রাজধানী তেল আবিব থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এই ভাষণ ছিল দম্ভ, হুমকি আর হুঁশিয়ারিতে পরিপূর্ণ। কোনো রাখঢাক ছাড়াই আয়াতুল্লাহ খামেনিকে উদ্দেশ করে নেতানিয়াহু বলেন- যারা আমাদের আঘাত করে, আমরা তাদের পাল্টা আঘাত করি। ইরান বা মধ্যপ্রাচ্যের এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে ইসরায়েলের দীর্ঘ হাত পৌঁছাতে পারে না।
নেতানিয়াহুর এমন সরাসরি হুমকির পর ধারণা করা হচ্ছে, এবার ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির বন্দুক হয়তো খামেনির দিকেই তাক করা। সামান্য কোনো ভুলে কিংবা ইরানী গোয়েন্দাদের বিশ্বাসঘাতকতায় প্রাণ হারাতে পারেন প্রতিরোধ যুদ্ধের নেতৃত্ব দেওয়া আয়াতুল্লাহ আল খামেনি।
ফরাসি সংবাদমাধ্যম লে প্যারিসিয়েন জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিমান হামলায় গেল শুক্রবার নিহত হন লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা হাসান নাসরুল্লাহ। হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে ইসরায়েলকে নাসরুল্লাহর অবস্থান সম্পর্কে গোপন তথ্য জানিয়ে দেয় এক ইরানি গুপ্তচর। এরপরই তার অবস্থানে হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে তেল আবিব।
লেবাননের নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়- অভিযুক্ত ওই ইরানি গুপ্তচর ইসরায়েলকে জানায়, শুক্রবার বৈরুতে হিজবুল্লাহর সদর দপ্তরে উচ্চপদস্থ কমান্ডারদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন নাসরুল্লাহ। তিনি যখন মাটির নিচে অবস্থিত সদর দপ্তরে প্রবেশ করেন, তার কিছুক্ষণ পরই বিমান হামলা চালানো হয়। এতে ব্যবহার করা হয় বাঙ্কার বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। যা হিজবুল্লাহর সদর দপ্তরকে ধসিয়ে দেয়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর ইসরায়েল হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। সম্প্রতি তারা হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যেসব সাফল্য পেয়েছে সেগুলো এসব গোয়েন্দা কার্যক্রমের কল্যাণেই এসেছে। তারা হিজবুল্লাহ সম্পর্ক গোপন তথ্য সংগ্রহে বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করে। যার মধ্যে অন্যতম হলো হিজবুল্লাহ ও ইরানের মধ্য থেকেই গুপ্তচর নিয়োগ করা।