হাতিয়া,নোয়াখালী স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগ এর শাসন আমলে দলীয় প্রভাব বিস্তার করেও এখনো এলাকায় দাপটের সহিত প্রভাব বিস্তার করা সহ এলাকায় লুট, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, খাল দখল, জমি দখল, গরু চুরি, সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন সহ বেপরোয়া চাঁদা বাণিজ্য ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করা, জোর করে গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে হাতিয়ার সুখচর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ড়ের আবুল হোসেন সওদাগরের দুই ছেলে ফরিদ উদ্দিন ওরুপে ফরিদ ডাকাত, ইউসুফ উদ্দিন ও জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে। তাদের এই অনিয়মের বিরুদ্ধে হাতিয়া থানায় একটি মামলা করেন ভুক্তভোগী।
ইউসুফ উদ্দিন বর্তমানে সুখচর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। তার ডান হাত বাম হাত হিসেবে কাজ করে তার ভাই ফরিদ উদ্দিন ওরুপে ফরিদ ডাকাত। ৫ আগষ্টের পরে ফরিদ উদ্দিনকে দেখা গেল ভিন্ন রুপে। এলাকায় এমন ভাবে দাপট ও প্রভাব বিস্তার করছেন যে মনে হচ্ছে তিনি দেশ স্বাধীন করে আসলেন। যেন তাকে সবকিছু দখলের, লুটপাটের ক্ষমতা দিয়ে সুখচর ইউনিয়নে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায় ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পরস্পর আত্মীয় ও পাশাপাশি বসবাস করে। ভুক্তভোগীর বাড়ী পশ্চিম পার্শ্বে আর অভিযুক্তদের বাড়ী পূর্ব পার্শ্বে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ভুক্তভোগীকে একা ও নিরীহ পেয়ে ভুক্তভোগীর উপর একের পর এক অন্যায় অত্যাচার করে আসছে। উক্ত অন্যায় অত্যাচারের বিষয় ভুক্তভোগীরা লোক সমাজে বিচার দিলেও কোন প্রতিকার পায় নাই। অভিযুক্তরা দিন দিন অন্যায় অত্যাচারের মাত্রা দ্বিগুন ছাড়িয়ে যাই।
গত ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে মঙ্গলবার সকাল ১১.০০ টার সময় ফরিদ উদ্দিন ও ইউসুফ উদ্দিন অজ্ঞাতনামা কিছু লেবার দিয়া ভুক্তভোগী ইরাক উদ্দিনের মালিক দখলীয় বাড়ীর সীমানার পূর্ব পার্শ্বে কয়েকটি করই গাছ থেকে গাছের ঢাল কেটে অনুমান ২০,০০০/- টাকার ক্ষতি সাধন করে। ভুক্তভোগী ইরাক উদ্দিনের ছেলে ওয়ামেদ হাসান ইপু দেখতে পেয়ে বাধা দিলে ফরিদ উদ্দিন ও ইউসুফ উদ্দিন ভুক্তভোগীর ছেলে ওয়ামেদ হাসান ইপুকে বেদম মাইরপিট করে এবং সমস্ত শরীরে মাইরপিট করে জখম করে। ওয়ামেদ হাসানের চিৎকার শুনে রোকসানা আক্তার ওয়ামেদ হাসানকে উদ্ধার করিতে গেলে রোকসানা আক্তারকে অভিযুক্ত ফরিদ উদ্দিন ও ইউসুফ উদ্দিন মাইরপিট করিয়া শাড়ী ব্লাউজ টেনে ছিঁড়ে কুউদ্দেশ্যে শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযুক্ত ফরিদ উদ্দিন, রোকসানা আক্তারের গলায় থাকা এক ভরি ওজনের একটা স্বর্নের চেইন মূল্য ১,০০,০০০/- টাকা জোর করে নিয়া যায়। ইউসুফ উদ্দিন অন্যদের সহযোগিতায় ওয়ামেদ হাসানের বুক পকেটে থাকা নগদ ২০,০০০/- টাকা জোর করে নিয়া যায়। জামাল উদ্দিন অন্য অভিযুক্তদের সহযোগিতায় ওয়ামেদ হাসানের হাতে থাকা ভিবো টার্চ মোবাইল মূল্য ১৫,০০০/- টাকা জোর করে নিয়া যায়। ভুক্তভোগীদের আত্মচিৎকার শুনে অভিযুক্তদের মধ্যে থেকে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। যার ভর্তির রেজিঃ নং-১৩/ ৩৯২০।
ভুক্তভোগীরা বলেন, ফরিদ উদ্দিন ও ইউসুফ উদ্দিন অন্যায় ভাবে আমাদের গাট কেটে এবং স্ত্রী শ্লীলতাহানি করে আমাদের ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা ক্ষতি করে। ওয়ামেদ হাসানকে হত্যা চেষ্টা করে, কোর্টে বা থানায় গেলে প্রানে মেরে পেলবে, পথে ঘাটে একা পেলে খুন জখম করবে বলে প্রতিনিয়ত হুমকি দেয়। আমরা এটার সঠিক বিচার চাই।
৯ নং ওয়ার্ড়ের রাশেদ উদ্দিন পেশায় পোয়া মাছের নৌকার মাঝি গত ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে রাতের ১১.৩০ মিনিটে জামাল বেপারীর নাম ভাঙ্গিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবী করে। এতে রাশেদ উদ্দিন টাকা অস্বীকৃতি জানালে ফরিদ উদ্দিনের নেতৃত্বে জামাল বেপারী ও ফরিদ উদ্দিন বেদম মারদর করে ফেলে রেখে যায়। তারপর জাফর ডাক্তারের দোকানে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়। বিচারের জন্য উপজেলায় রওনা হলে প্রাণ নাশের হুমকি দেয় বলে জানান ভুক্তভোগী।
৯নং ওয়ার্ডের, মফিজ উদ্দিন, মাহফুজা খাতুন ও মাকসুদ হোসেন মাসুদকে গত ২৬ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে রাত ১০ টার সময় এই তিন জনকে মারধর ও জখম করে। তিনজনই একই পরিবারের সদস্য। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফরিদ উদ্দিনের নেতৃত্বে তাদের উপর হামলা চালায়। তারা পারিবারিক ভাবে অস্বচ্ছল হওয়ায় নিযাতন স্বীকার হলেও প্রতিবাদ করতে পারেন নি বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদ উদ্দিন বলেন, আমরা পরস্পর আত্মীয় স্বজন, যেই গাছটি নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে এটা দো সীমানার মধ্যে, এটা আমাদের গাছ। আমার ভাই ইউসুফ উদ্দিনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছিলো ইপু এজন্য আমার ভাই রেগে যায়।
এই বিষয়ে ইউসুফ উদ্দিনকে বারবার মুঠোফোনে চেষ্টা করলেও তিনি তা রিসিভ করেন নি, তাই তার মন্তব্য নেওয়া হয়নি।
এই বিষয়ে হাতিয়া থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) মনিরুজ্জামান বলেন, সঠিক তদন্ত করে আইনি পদক্ষেপ নিবো।