1. bdweb24@gmail.com : admin :
  2. nemadmin@bongonewsbd24.com : :
  3. him@bdsoftinc.info : Staff Reporter : Staff Reporter
  4. info@wp-security.org : Security_64733 :
বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
ভারত যে বাঁধ দিচ্ছে সেটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন: তারেক রহমান গৌরনদীর তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন জাতীয় হিন্দু মহাজোটের কালিহাতী উপজেলা শাখার সভাপতি পুলক ভৌমিক পরলোক গমন সায়মা শাহজাহান একাডেমীর বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বীরগঞ্জে গাভী পালন প্রশিক্ষণ শেষে সনদপত্র বিতরণ জামায়াতে ইসলামী মানবিক ও দূর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চায়ঃ জয়পুরহাটে ডাঃ শফিকুর রহমান বালিয়াকান্দিতে নবাগত জেলা প্রসাশকের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত রাজশাহীতে সাংবাদিকের হাত ভেঙ্গে দিলেন পবা উপজেলার কথিত বিএনপি নেতা শরীফ পটুয়াখালীতে জমি চাষকরা নিয়ে সংঘর্ষ ড্রাইভার সহ আহত-৩। রাজধানী ডেমরায় খালেদা জিয়ার সুস্থতায় দোয়া কামনা করে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ

পার্বত্য মেলা: তারুণ্যের উৎসবে রসনা বিলাস

রিপোর্টার
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৩০ বার দেখা হয়েছে

মো. রেজুয়ান খান : দেশের মোট ভূ-খন্ডের এক দশমাংশ অঞ্চল জুড়ে আছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। ২০২৪ জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশের পরিবর্তনের চাকা ঘূর্ণণের মাতোয়ারায় উদ্যমী পাহাড়ি তরুণ জনতা। সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে পাহাড়ি-বাঙালি সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করে চলছে। জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের অগ্রভাগে ছিল তরুণ জনতা। বাংলাদেশের তরুণরা জেগেছিল, জেগে আছে এবং আবহমানকাল জেগে থাকবে। টগবগে এই তরুণ জনতা তারুণ্যের উৎসবে স্বাধীনতার সূর্য্যকে কখনো ম্লান হতে দিবে না এ বিশ্বাস সকলের। তারুণ্যের এ উৎসবে সামিল আছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনপদ।

‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’- সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এখন সবাই সরব। টগবগে পাহাড়ি তরুণ যুবক ও জনতা তারুণ্যের উৎসবে দেশের উন্নয়ন ও পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় মিশে একাকার হওয়ার প্রয়াস চালাচ্ছে। পাহাড়ি তরুণরা শুধু জুম চাষ আর পুজা পার্বন উৎসবেই সীমাবদ্ধ নয়, সম্প্রীতির বন্ধনে পার্বত্য অঞ্চলের সৌন্দর্য্য বর্ধন, শিক্ষা, সংস্কৃতি, খেলাধুলা এবং রাজধানীর পার্বত্য মেলার বিস্তারকে ছড়িয়ে দিতে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের তারুণ্যের উৎসব পাহাড়ি জনপদের একটুকরো অংশকে উপহার দিতে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি থেকে ০১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে পাহাড়ি-বাঙালিরা পার্বত্য মেলার পসরা সাজাতে ব্যস্ত। পাহাড়ি পণ্যসহ ৮০টির মতো স্টল থাকবে এবারের মেলায়। উৎসবমুখর পরিবেশে পার্বত্য মেলা ও তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ উদযাপিত হতে চলেছে। উল্লেখ্য যে, ৩০ তারিখ সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অবিরাম মেলার কার্যক্রম চলবে। স্টল নির্মাণের কাজ চলছে। পাহাড়ি-বাঙালির মিলন মেলায় পরিণত হবে এ মেলা। আপ্যায়নে পাহাড়ি খাবার মেন্যুতে থাকবে বৈচিত্র্যতা। এছাড়াও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে।

বাংলাদেশের খাদ্য সংস্কৃতি বৈচিত্র্যময়। ভৌগোলিক গঠন এবং বিভিন্ন অঞ্চলের খাদ্য সংস্কৃতি আমাদের খাদ্যাভ্যাসকে করেছে সমৃদ্ধ। এর মধ্যে পার্বত্য অঞ্চলের খাবার এক ব্যতিক্রমী খাদ্যভাণ্ডার হিসেবে দখল করে আছে। পার্বত্য অঞ্চলের খাবারে প্রকৃতির সান্নিধ্য এবং সহজলভ্য বিভিন্ন খাদ্যের উপাদান পাহাড়ি খাদ্যভাণ্ডারকে সৃজনশীল করেছে। পাহাড়ি প্রকৃতি, আবহাওয়া, পাহাড়, পর্বত, নদী-ঝর্ণা, লতাপাতার গুল্ম, শাকসবজি, ফল-ফলাদি, সবুজ বৃক্ষের সজীবতা এবং স্থানীয় ঐতিহ্যের মিশ্রণ এ অঞ্চলকে সমতল থেকে করেছে আলাদা।

পার্বত্য এলাকার মানুষজন মাছ, মাংস, শাকসবজি, ফলমূল, শুঁটকি, এবং বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান মিশ্রিত মশলা দিয়ে পুষ্টিকর, স্বাস্থ্যসম্মত এবং স্বাদে অতুলনীয় রসনা বিলাস খাবার তৈরি করে থাকে। এই খাদ্যসম্ভার আমাদের মুগ্ধ করে এবং স্বাদের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।

এবারের পার্বত্য মেলায় খাবার মেন্যুতে থাকছে জনপ্রিয় পাহাড়ি শাকসবজি, প্রাকৃতিক উপাদানের মসলা, মাছ, মাংস এবং কচি বাঁশ। শেদ্ধ কচি বাঁশ, বাঁশের ডাল, বাঁশ দিয়ে ছোটো মাছ রান্না ও সবজির মিশ্রণে বাঁশ খাদ্য মেলায় রসনা বিলাসিতাকে বাড়িয়ে দিবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের জন্য বাম্বু চিকেন একটি জনপ্রিয় খাবার। এটি মূলত আস্ত টুকরো করা বাঁশের মধ্যে মুরগির মাংস, হলুদ, কাঁচা মরিচ, আদা, রসুন, ধনেপাতা, লবণ, এবং অন্যান্য মসলার মিশ্রণ দিয়ে তৈরি করা হয়। পাহাড়ি চিকেন মসলার সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে বাঁশের মধ্যে ভরে অল্প আঁচে রান্না করা মাংসে চুলোর ধোঁয়া এবং কাঠের গন্ধের মিশ্রণ মেলায় ক্রেতাদের রসনার স্বাদকে বাড়িয়ে দিবে। উনুনের উপর থাকা অবস্থায় বাঁশের খোলস ফেটে গেলে সুস্বাদু মাংস বাঁশকোড়ল যে পুরোপুরি প্রস্তুত তা বুঝা যাবে।
মেলায় সামুদ্রিক মাছের সিধল শুঁটকি বিভিন্ন মশলা এবং শাকসবজি, বাঁধা কপি, লাউ, কুমড়ো, বরবটি, আলু ইত্যাদি রান্না করে পরিবেশন করা হবে। পাহাড়ের গোল আলু, মিক্স সবজি, হাঙ্গর শুঁটকি দিয়ে বেগুন, কাঠাল, সিম দিয়ে রান্না করার স্বাদও অতুলনীয়। পাজন রান্না পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর আরেকটি ঐতিহ্যবাহী নিরামিষ খাবার। এ খাবারটি তৈরিতে বাঁধাকপি, মিষ্টি কুমড়ো, বরবটি, পুঁই শাক, মুলা ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। আকর্ষণীয় আরেকটি রান্নার আইটেম হলো পাজন। পাজন তৈরি খাবারে অতিরিক্ত মশলা বা তেলের প্রয়োজন হয় না। পাহাড়ি দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় এ খাবারটি এবারের মেলায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভাপ দিয়ে রান্না করা বা সেদ্ধ করা হেবাং খাবার মেলায় আগ্রহী ক্রেতাদের রসনার স্বাদকে আরও বাড়িয়ে দিবে। এসব খাবারে অল্প তেল ব্যবহার আর হরেক রকমের উপাদান মিশ্রণ খাবারের সতেজতা ও পুষ্টিগুণে ভরপুর থাকবে। চিংড়ি, ছোটো মাছ ও কাঁকড়া দিয়ে তৈরি শুঁটকিকে প্রসেস করে নাপ্পি খাবার তৈরি হয়, যা পাহাড়ি-বাঙালিদের রসনা বিলাসের একটি জনপ্রিয় খাবার। ভালো করে মসলা মাখিয়ে ডিমের তৈরি হেবাং পাহাড়ি মেলার আকর্ষণকে আরও বাড়িয়ে দিবে। এছাড়া শামুকের ঝোল খাবার তো থাকছেই।

পার্বত্য মেলায় পাহাড়ি ব্যবস্থাপনায় বিশাল আয়োজনে রাজধানীবাসীসহ সকলের জন্য থাকছে তুলশিমালা চালের চিকেন বিরিয়ানি। এর সুগন্ধী মেলায় আগতদের মাতোয়ারা করে তুলবে। সেসাথে থাকছে সান্নী পিঠা, কলা পিঠা, কালো বিন্নি চালের পিঠা, লাড্ডু, সিস্টেম, খাংময়, ব্যাম্পো সুট, ইজোর ইত্যাদি। সেদ্ধ শাক ভর্তায় পরিপূর্ণতা আনবে। ঢেঁকিশাক সেদ্ধ, ফুলকপি সেদ্ধ, সেদ্ধ সিম ইত্যাদির সাথে মরিচ, সিদল শুঁটকি, ধনে পাতা, পেঁয়াজ, লবণ মিশ্রণে ভর্তা তৈরি করা থাকবে মেলাতে। ভর্তা প্রেমিদের শুঁটকি বড়া পিঠা, হলুদ ফুলের ভর্তা সারাক্ষণ মাতিয়ে রাখবে। পাহাড়ি ফলের তুলনা হয় না। আম, কলা, পেপে, আনারস মেলার ভোজন রসিকদের রসনার আকর্ষণকে বাড়াবেই। মেলায় আগত অতিথিদের আকর্ষণীয় করার জন্য থাকছে সুপেয় আখের রস। এসব খাবারের পাশাপাশি মেলার স্টলগুলোতে সাজানো থাকবে ঐতিহ্যবাহী পাহাড়ি সংস্কৃতির বুনন শিল্পের ছোট-বড় সবার জন্য নানান বাহারি পোশাক। নকশি করা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, নিজস্ব ডিজাইন করা পোশাক, টেক্সটাইল পণ্য ও হস্তশিল্প পণ্যগুলো সবধরনের ক্রেতাদের আকর্ষিত করবে। ক্রেতারা এখানে সাধ্যিমতো তাদের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে পারবেন।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, যাদের খাদ্যে অ্যালার্জি, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে, তারা ডাক্তারের পরামর্শ মতে জেনে বুঝে পার্বত্য মেলার রসনা বিলাসিতায় অংশ নিবেন। পাহাড়ি এ ধরনের খাবার প্রকৃতি ও পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়া পার্বত্য এলাকার মানুষগুলো অভ্যস্ত আছে। প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি এসব খাবার সুস্বাদু, পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যসম্মত। পাহাড়ি এসব খাবার রসনা বিলাস এর পরিপূর্ণতা দিবে। বৈচিত্র্যময় মেলাটি তারুণ্যের উৎসবে পরিণত হবে।

লেখক: তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ

© ২০২৩ bongonewsbd24.com