বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: দর্শকের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে লাল কার্ড দেখলেন এক গোলরক্ষক। শনিবার ইংল্যান্ডে ঘটেছে এই ঘটনা। এফএ ট্রফির ওয়ারিংটন টাউন বনাম গুইসলি ম্যাচের ঘটনা। দুইপক্ষের ঝামেলা হয় অদ্ভুত এক কাণ্ড ঘিরে।
সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবেই চলছিল দুই দলের ম্যাচ। দলের দুর্গ রক্ষা করতে ব্যস্ত ছিলেন ওয়ারিংটনের গোলরক্ষক টনি থম্পসন। প্রতি ম্যাচের মতোই গোল পোস্টের পাশে রেখেছিলেন নিজের পানির বোতল। সেদিকের গ্যালারিতে ছিলেন গুইসলি সমর্থকরা। তারা লাগাতার থম্পসনকে বিরক্ত করছিলেন। ম্যাচের ৬০ মিনিট নাগাদ পানি পান করতে যান তিনি। তখনই বাধে বিপত্তি। বোতলের পানি বিস্বাদ লাগে তার। বুঝতে পারেন পানির মধ্যে কেউ প্রস্রাব করে দিয়েছে। গ্যালারির একজন দর্শকও দাবি করেন, তিনিই অপকর্মটি করেছেন। তাতে মাথা গরম হয়ে যায় থম্পসনের। বোতলটি এও গুইসলি সমর্থকের দিকে ছুড়ে মারে ২৭ বছরের গোলরক্ষক। তাতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিষয়টি নজর এড়ায়নি রেফারির। দর্শকদের আঘাত করার চেষ্টার অপরাধে থম্পসনকে লাল কার্ড দেখান রেফারি।
মাঠ ছাড়ার পরেও মাথা ঠাণ্ডা হয়নি ওয়ারিংটন গোলরক্ষকের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, “আজ আমি খেলাটার প্রেমে পড়ে গেলাম! মাঠে আমাকে অনেক নামে ডাকা হয়েছে। আমার পানির বোতলে কেউ একজন প্রস্রাব করে দিয়েছেন। সেই পানি মুখেও দিয়েছি আমি। অথচ আমাকে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর সুযোগ দেওয়া হল না। যিনি এই জঘন্য কাজটি করেছেন, তিনি আমার স্বস্থ্যের ক্ষতি করতে চেয়েছেন। আমার পরিবারকে বিপদে ফেলতে চেয়েছেন।” ঘরের মাঠে খেলতে নেমে এমন অভিজ্ঞতায় অত্যন্ত হতাশ তিনি।
থম্পসন নিজের আচরণের জন্যও পরে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, “মনে হয় না ভবিষ্যতে কখনও আর এমন আচরণ করব। গুইসলির সমর্থকরাও পরে ক্ষমা চেয়েছেন। যেই করুক অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ করেছে। আশা করব কারও জীবনে এমন কিছু আর ঘটবে না।”
রেফারির লাল কার্ড দেখানো নিয়েও ক্ষুব্ধ তিনি। থম্পসন বলেছেন, “ওই উত্তেজনার পর পরিস্থিতি সম্ভবত রেফারির নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। কেউ যদি আমার বোতলে প্রসাব করে দেয়, তাহলে সেটা তো ফেলেই দেব। তার জন্য আমাকে মাঠ থেকে বের করে দেওয়া অপমানজনক।”
এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ওয়ারিংটন কর্তৃপক্ষও। তারা বলেছে, “এমন কোনও ঘটনা ঘটলে ফুটবল নিয়ে কথা বলা কঠিন। আমাদের মতে খেলোয়াড়দের সুরক্ষাই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। থম্পসনের সঙ্গে যা করা হয়েছে, তা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। যারা এমন কাজ করতে পারে, তাদের মাথা লজ্জায় নিচু হয়ে যাওয়া উচিত। তাদের কখনও ফুটবল মাঠে ঢুকতে দেওয়া উচিত নয়। রেফারিরও সাধারণ জ্ঞান থাকা উচিত।”
উল্লেখ্য, এই ঘটনার পর খেলা থেকে ক্রমশ হারিয়ে যায় ওয়ারিংটন। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে প্রতিযোগিতা থেকেও ছিটকে গেছে তারা। সূত্র: ডেইলি মেইল, মেট্রো ইউকে, ওয়ারিংটন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড, দ্য গার্ডিয়ান, মিরর ইউকে, টক স্পোর্ট, এলবিসি, দ্য সান ইউকে, ইএসপিএন