বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক : বিশ্বমঞ্চে ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের ‘অভিশাপ’ পেছনে ফেলার সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল দলটির। কিন্তু তীরে এসে তরী ডুবিয়েছে প্রোটিয়ারা।
কলতাকাতার ঐতিহাসিক ইডেন গার্ডেন্সে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। যেখানে আগে ব্যাট করে ৪৯.৪ ওভারে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ২১২ রান সংগ্রহ করে প্রোটিয়ারা। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তিন উইকেট ও ১৬ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অজিরা। এতে দ্বিতীয় দল হিসেবে ত্রয়োদশ বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নিলো প্যাট কামিন্সের দল।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেড। ম্যাচের শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন তারা। ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়ান এ দুই ব্যাটার। এভাবে নির্বিঘ্নে ৫ ওভার কাটিয়ে দেয় এ জুটি।
ম্যাচের ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলেই ওয়ার্নারকে বোল্ড করেন মার্করাম। আউট হওয়ার আগে ১৮ বলে ২৯ করেন এ বাঁ-হাতি ব্যাটার।
পরে ক্রিজে আসেন মিচেল মার্শ। তবে উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। রাবাদার বলে অবিশ্বাস্য ক্যাচ নিয়ে তাকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান ডুসেন।
এরপর উইকেটে আসেন স্টিভেন স্মিথ। তাকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় ইনিংস এগিয়ে নিচ্ছেন হেড। সেই সঙ্গে অর্ধ শতক পূরণ করেছেন হেড। ৪০ বলে ফিফটি করেন তিনি।
ম্যাচের ১৫তম ওভারে হেডকে বোল্ড করেন কেশব মহারাজ। সাজঘরে ফেরার আগে ৬২ করেন তিনি। তার বিদায়ে ক্রিজে আসেন মার্নাস লাবুশেনে। ব্যক্তিগত ইনিংস বড় করার আগে ফিরে যান তিনিও (১৮)।
বাইশ গজে এসেই শামসির ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। পরে জশ ইংলিসের সঙ্গে মাঝারি জুটি গড়েন স্মিথ। তবে থিতু হওয়া স্মিথকে ডি ককের তালুবন্দী করেন কোয়েৎজে। এরপরই ইংলিশকেও বোল্ড করেন এ ডানহাতি পেসার।
শেষ মুহূর্তে স্টার্ক ও কামিন্সের ছোট্ট ক্যামিওতে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অজিরা। এতে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের মঞ্চে পঞ্চমবারের মতো কপাল পুড়লো প্রোটিয়াদের।
এর আগে চারবার (১৯৯২, ১৯৯৯, ২০০৭ ও ২০১৫) বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু কোনবারই ফাইনালের টিকেট পায়নি তারা। এবার দারুণ সুযোগ তৈরী করেও আবারো ব্যর্থ হলো প্রোটিয়ারা।
এদিন দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট শিকার করেন কোয়েৎজে ও শামসি।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকা দলপতি টেম্বা বাভুমা। তবে শুরুতেই ফিরে যান এ দুই ব্যাটার।
এরপর বলার মতো তেমন কেউেই ব্যাটে রান পাননি। তবে হেনরিখ ক্লাসেনের সঙ্গে জুটি গড়ে তোলেন মিলার। ভয় ধরানো এ জুটিতে আঘাত হানেন হেড। তার বিদায়ে ভেঙে যায় মিলার-ক্লাসেনের ৯৫ রানের জুটি।
পরের বলেই সাজঘরে ফেরেন মার্কো জানসেন। এতে আবারো চাপে পড়ে প্রোটিয়ারা। সেই চাপ সামাল দিতে মিলারকে যোগ্য সঙ্গ দেন কোয়েৎজে। এ জুটির ব্যাট থেকে আসে ৫৩ রান। কিন্তু প্যাট কামিন্সের বাউন্সারে দুর্ভাগ্যজনভাবে আউট হন কোয়েৎজে (১৯)।
অন্যপ্রান্তে ব্যাট হাতে একাই লড়াই চালিয়ে যান মিলার। পরে ম্যাচের ৪৮তম ওভারের প্রথম বলে কামিন্সকে ছক্কা হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি। মূলত তার ব্যাটেই দুইশো রান অতিক্রম করে প্রোটিয়ারা। তবে সেঞ্চুরির ইনিংস লম্বা করতে পারেননি মিলার। একই ওভারের তৃতীয় বলে তাকে হেডের তালুবন্দী করেন কামিন্স। এতে প্রোটিয়াদের ইনিংস থামে ২১২ রানে।
এদিন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেন মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স।