বঙ্গনিউবিডি ডেস্ক: দাফনের ১৫ বছর পর কবরে মিললো অক্ষত লাশ। কাফনের কাপড়টুকুতেও লাগেনি সামান্য দাগ। চারপাশে চিকচিক করছিল বালু। এ ঘটনাটি ঘটেছে রংপুর মহানগরীর নব্দীগঞ্জ গোদা-শিমলা এলাকায়। বিরল এ ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
ইসলামিক চিন্তাবিদদের মতে, এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। দুনিয়ায় যারা আল্লাহর বিধিনিষেধ মেনে চলেন তাদের হেফাজতের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহই নিয়ে থাকেন। তাদেরকে কোনো কিছুই স্পর্শ করে না। ওই ব্যক্তির বেলায়ও হয়েছে তাই।
ঘটনাটি বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিকেলের। রংপুর-কুড়িগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে রংপুর মহানগরীর নব্দীগঞ্জ গোদা-শিমলা এলাকায় গ্যাসের সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ চলছিল। এ কারণে সেখান থেকে কয়েকটি কবর স্থানান্তরের উদ্যোগ নেন স্বজনরা। দুইদিনে ৪টি কবর স্থানান্তরের পর আরেকটি কবর খুড়তেই ঘটে আশ্চর্যজনক ঘটনা। দেখা গেল, অক্ষত অবস্থায় ধবধবে সাদা কাপড় দিয়ে মোড়ানো আছে লাশ।
স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, ২০১০ সালে সেখানে কবরস্থ করা হয়েছিল মরহুম আব্দুস সামাদকে। পনেরো বছর আগের সেই পুরোনো কবরটি স্থানান্তর করতে গিয়ে এ ঘটনায় অবাক তারা। দ্বিতীয়বার স্বচোক্ষে অবিকল অভিভাবককে দেখতে পারায় অবাক মরহুমের স্বজনসহ পুরো গ্রামবাসী।
জানা গেছে, ১২৩ বছর বয়সে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় নিজ বাড়িতে মারা যান আব্দুস সামাদ। ছিলেন কৃষিকাজের সাথে যুক্ত। তিনি আট ছেলে ও চার কন্যাসন্তানের জনক। এরমধ্যে তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে মারা গেছেন।
আব্দুস সামাদের ছেলে জানান, তার বাবার শরীরের কোথাও কোনো পচন ধরেনি। এমনকি কাফনের কাপড়ও নষ্ট হয়নি। তাকে কোনো কিছুই স্পর্শ করেনি। হজের ইহরামের কাপড় দিয়ে তাকে কবরস্থ করা হয়েছিল। যেভাবে তাকে কিবলামুখী করে রেখেছিলাম সেভাবেই কবরে ছিল। আলহামদুলিল্লাহ এটা আল্লাহর বান্দার প্রতি তার রহমত ছাড়া আর কিছুই নয়।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সেখানে ভিড় জমান আশপাশের এলাকার মানুষও। তারা জানান, পরহেজগার মানুষ ছিলেন আব্দুস সামাদ। এলাকার সব থেকে জনহিতকর মানুষ হিসেবে খ্যাতি ছিল তার। ছিলেন তাবলীগ জামায়াতের সাথে যুক্ত। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে দিতেন ইসলামের দাওয়াত।
ধাপ সাতগাড়া বায়তুল মোকাররম মডেল কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আনম হাদিউজ্জামান জানান, এ ধরনের ঘটনা অস্বাভাবিক নয়, যারা দুনিয়াতে সবকিছু ভুলে আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলেন তাদেরকে কবরে সুসংবাদ দেওয়া হয়। কবর পোকা-মাকড়ের ঘর হলেও তাদের কোনো কিছুই স্পর্শ করে না। শুধু তাই নয় ইসলামের পথে থাকা ওইসব ব্যক্তির দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ নিজের।
তিনি আরও জানান, আল্লাহ ওই ব্যক্তিকে তার ভালো কাজের জন্য পুরস্কার হিসেবে এটা দিয়েছেন। কারণ এটা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি। আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন যারা আল্লাহর হয়ে যান, আল্লাহ তার হয়ে যান। এ ধরণের মানুষকে কবরে কোন কিছু স্পর্শ করবে না এবং কবরেও তার রিজিকের ব্যবস্থা আল্লাহই করেন।