বঙ্গনিউজবিডি ডেস্ক: নন্দীগ্রাম মামলায় আবারো এক নাটকীয় মোড়। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঁচ লাখ কা জরিমানা করে মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন। এর ফলে মামলাটি কোন বেঞ্চে যাবে, তা নতুন করে স্থির করতে হবে আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে।
বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ নন্দীগ্রাম মামলা কলকাতা হাইকোর্টে উঠেছিল। বিচারপতি কৌশিক চন্দ গোড়াতেই জানিয়ে দেন, তিনি এই মামলা থেকে সরে দাঁড়াতে চান। সেই সঙ্গে মামলাকারী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেন তিনি।
মোদির কাছে বকেয়া টাকা দাবি মমতার সরকারের
বিচারপতির অভিযোগ, বিচারব্যবস্থাকে কলুষিত করা হয়েছে। সে জন্যই এই জরিমানা। রাজ্য বার কাউন্সিলে জরিমানার টাকা জমা দিতে হবে। জরিমানার অর্থ কোভিড চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবে। বিচারপতি সরে দাঁড়ানোয় মামলাটি কোন বেঞ্চে যাবে, তা এবার ঠিক করবেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। মাস্টার অফ রোস্টার হিসেবে তাকে এই কাজ করতে হবে।
বিতর্ক শুরু হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে জরিমানা করা নিয়ে। বিচারপতির বক্তব্য, তার বিরুদ্ধে মামলাকারীর পক্ষ থেকে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তার জন্য তিনি সরছেন না। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় তিনি সরে দাঁড়াচ্ছেন। মামলাকারীর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, বিচারপতি আগে আইনজীবী হিসেবে বিজেপির হয়ে মামলা লড়তেন। অর্থাৎ, বিচারপতির বিরুদ্ধে সরাসরি রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের ইঙ্গিত করা হয়েছিল।
বিচারপতি এদিন বলেন, ‘আমার সঙ্গে একটি রাজনৈতিক দলের গভীর সম্পর্ক রয়েছে, তাই মামলাটি ছেড়ে দেওয়া উচিত- এই অভিযোগের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সাধারণ মানুষের উপর ছাড়া যায় না। এটা বিচারপতি ঠিক করবেন। কারও কোনও রাজনৈতিক পছন্দ থাকতে পারে না, এটা এ দেশে প্রায় অসম্ভব। বিচারপতিরাও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেন। তারাও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে ভোট দেন। তাছাড়া বিচারপতির নিয়োগ সংক্রান্ত সিক্রেট রিপোর্ট জনসমক্ষে আনাটা কি ঠিক? একজন মুখ্যমন্ত্রী গোপনীয়তা বজায় রাখারও শপথ নেন।’
শেষ লাইনেই জরিমানার কারণ স্পষ্ট করেছেন বিচারপতি। মুখ্যমন্ত্রী গোপনীয়তা বজায় রাখেননি বলে তাকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মুখ না খুললেও প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান। তিনি বলেছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা হবে।
সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েনও টুইটে লিখেছেন, ‘আমরা এমন একটা পৃথিবীতে বাস করছি যেখানে সত্যি কথা বলার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হয়। আমরা এমন একটা পৃথিবীতে বাস করি যেখানে মিথ্যে প্রচারের জন্য কোনও দাম দিতে হয় না। প্রসঙ্গটা ধরা গেল? মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায় (মোদী থাকলেই সম্ভব)।’
নন্দীগ্রামে ভোটের ফলে কারচুপি হয়েছে, এই অভিযোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। শুভেন্দু অধিকারীর কাছে সামান্য ভোটে সেখানে হেরেছিলেন তিনি। সূত্র: ডিডাব্লিউ, পিটিআই, আনন্দবাজার